top of page

Internet of Things (IoT)

  • Oct 27, 2024
  • 4 min read

ree

আসসালামুয়ালাইকুম। আজকে আপনাদের সামনে হাজির হয়েছি নতুন কিন্তু জনপ্রিয় একটি টপিক্স নিয়ে। IoT এর সাথে কমবেশি সবাই পরিচিত। এই পর্বে আপনাদের IoT সম্পর্কে বেসিক কিছু ধারণা দিবো।


এবার চলুন জেনে নেই ইন্টারনেট অব থিংস (IoT) কি?


বর্তমান যুগে খুব জনপ্রিয় কিছু টেকনোলজির মধ্যে IoT অন্যতম। ডিজিটালাইজেশনের এই যুগে আমরা অনেক বেশি ইন্টারনেট বা অনলাইন নির্ভর হয়ে যাচ্ছি। মোবাইল ফোন, কম্পিউটার,স্মার্ট ওয়াচ, টিভি, কফি মেকার, টোস্টার মেশিন এমন কি ফুলের টবে পানি দেয়ার সিস্টেমকেও অনলাইনের সাথে আমরা কানেক্টেড করছি। ইন্টারনেট এমন একটা যোগাযোগ মাধ্যম যা আমাদের সবগুলো ডিজিটাল ডিভাইসকে ইন্টারকানেক্টেড করতে পারে।আইওটি হল মূলত ইন্টারনেটের মাধ্যমে বিভিন্ন ডিভাইস সংযুক্ত করা যা মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ করবে বা বিভিন্ন কাজে সাহায্য করবে।উদাহরণ হিসেবে স্মার্ট ফ্রিজের কথা বলা যেতে পারে। আইওটি প্রযুক্তি বাস্তবায়ন করা গেলে স্মার্ট ফ্রিজ হবে এমন একটি যন্ত্র যা নিজ থেকেই ভেতরে প্রয়োজনীয় খাদ্য আছে কিনা তা শনাক্ত করতে সক্ষম হবে। এক্ষেত্রে ফ্রিজের ভেতরে ক্যামেরা স্থাপন করা হবে যা ফ্রিজের ভেতরের অবস্থা পরিদর্শন করে গ্রাহককে টেক্সটের মাধ্যমে সামগ্রিক অবস্থা জানাবে।


ইন্টারনেট অব থিংস কিভাবে কাজ করে ?


প্রাক্টিকালি বিশ্লেষণ করতে গেলেঃ আমরা যা কিছু দেখি, যা কিছু করি, বা বিবেচনা করি তার সবকিছুই মোটামুটি কোন না কোন সেন্সর দিয়ে পর্যবেক্ষণ করে ডিজিটাল ডাটায় রূপান্তর করা যায়। আর এই ডাটা সমূহকে বিশ্লেষণ করে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত তৈরি করা যায়। এছাড়াও এসব সিদ্ধান্ত সমূহকে বিবেচনা করে নতুন নির্দেশনা এবং গাইডলাইনও তৈরি করা যায়। সিদ্ধান্ত, গাইডলাইন সবই যেহেতু ডিজিটাল ডাটা তাই স্টোরেজ ডিভাইস সমূহে সহজেই এসব তথ্য জমা রাখা যায় এবং প্রয়োজন অনুযায়ী পরিসংখ্যান বা গ্রাফের মাধ্যমে দেখানো যায়।অর্থাৎ সংক্ষেপে বলতে গেলে, কোন পরিবর্তনকে পর্যবেক্ষণ করা, প্রসেস করা, সিদ্ধান্ত তৈরি করা এবং ঐ সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে সিস্টেমের অন্যান্য বৈশিষ্ট্যগুলোকে পরিচালনা, সংরক্ষণ, ভিজুয়ালাইজেশন এই সব গুলো বিষয়কে সমন্বিত করে যে নতুন ধারণা প্রবর্তিত হয়েছে সেটিই ইন্টারনেট অব থিংস বা IoT ।ইন্টারনেট অব থিংস বা IoT এর ক্ষেত্রে সেন্সরগুলো নেটওয়ার্কের মাধ্যমে পরিবেশ থেকে ডাটা সংগ্রহ করে ওয়্যার কমিউনিকেশন, রেডিও ফ্রিকোয়েন্সি(RF), সিরিয়াল কমিউনিকেশন(UART) বা সিরিয়িাল পেরিফেরাল ইন্টারফেস (SPI) ইত্যাদি কমিউনিকেশনের মাধ্যমে লোকাল প্রসেসিং ডিভাইসে ডাটা প্রসেস করে এবং পরবর্তীতে বিভিন্ন কমিউনিকেশন প্রটোকল যেমন HTTP, MQTT, WiFi, Bluetooth ইত্যাদি ব্যবহার করে ওয়েব সার্ভার বা ক্লাউড সার্ভারে পাঠানো হয়। সার্ভারে বা ক্লাউড সিস্টেমের, ডাটাবেজে ডাটা সমূহ জমা থাকে। এর মাধ্যমে সেন্সর থেকে প্রাপ্ত ডাটাসমুহকে, ডাটা এনালাইটিক্স এর মাধ্যমে ডাটা প্রসেস করা হয় এবং সিস্টেম থেকেই ফলাফলসমুহকে ফিল্টারিং করে সিদ্ধান্ত বা কমান্ড তৈরি করা হয়। পরবর্তীতে এর মাধ্যমে স্টোরেজ ডাটাসমুহের সাথে ডিপেন্ডেড অন্যান্য সিস্টেমসমুহকে পরিচালনা করা হয়। ডাটা ভিজুয়্যালাইজারের মাধ্যমে গ্রাফিক্যালি বা পরিসংখ্যান আকারে রিপোর্ট প্রদর্শন করা হয়। সমস্ত প্রক্রিয়াটি অনলাইন নির্ভর হওয়ায় দূর থেকেই সিস্টেমে কমান্ড পাঠানোর মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ, স্ট্যাটাস ভিজুয়ালাইজ করা, চালু করা-বন্ধ করা সবকিছুই IoT এর মাধ্যমে করা যায়।



আইওটি কি নিরাপদ?


প্রতিটি নতুন প্রযুক্তিরই কিছু না কিছু খুঁত থাকে। আইওটির ক্ষেত্রে যথেষ্ট নিরাপত্তা এবং গোপনীয়তা রক্ষা করা মূল বাঁধা হয়ে দাঁড়াতে পারে। আইওটি ডিভাইসসমূহে ব্যবহারকারীদের ব্যক্তিগত ডেটা সংরক্ষিত থাকে। এই যেমন স্মার্ট মিটার জানে কখন ব্যবহারকারী ঘরে আছেন কিংবা তিনি কি ধরণের যন্ত্র ব্যবহার করেন। এই তথ্যগুলো অন্যান্য ডিভাইসেও শেয়ার করা হয় এবং প্রস্তুতকারী কোম্পানিটির ডেটাবেসে সংরক্ষিত থাকে।নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞদের মতে, আইওটি ডিভাইসসমুহে গোপনীয়তা রক্ষা এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য এখন পর্যন্ত পর্যাপ্ত পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। নিজেদের দাবি সত্য প্রমাণ করতে তারা বেবি মনিটর থেকে শুরু করে স্বয়ংক্রিয় আলোকব্যবস্থা, স্মার্ট ফ্রিজ এমনকি ট্রাফিক সিগন্যাল ও হ্যাক করতে সক্ষম হয়েছেন।


ব্যবসাক্ষেত্রে আইওটির প্রভাব কতটুকু?


ব্যবসা বাণিজ্যে আইওটির ব্যবহার অনেকটা নির্ভর করবে আপনি কোন শিল্প মাধ্যমে কাজ করছেন তার উপর। উৎপাদন শিল্পে আইওটি ব্যবহারের মাধ্যমে সর্বোচ্চ উপযোগিতা নিশ্চিত করা সম্ভব। প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম, যন্ত্রপাতি এবং লোকবল সংগঠনের কাজে আইওটি ব্যাবহার করা যেতে পারে। বর্তমানে শস্য ফলন বৃদ্ধি এবং গবাদিপশুর স্বাস্থ্য পর্যবেক্ষণের কাজে সেন্সর ব্যবহার করা হচ্ছে।এরকম অসংখ্য উদাহরণ টেনে বলা যায়, কম্পিউটার কিংবা ওয়েবের মত আইওটিও একটা সময় বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়বে। তবে এক্ষেত্রে একটি জিনিস মাথায় রাখা উচিত- যখন কোনো নির্দিষ্ট যন্ত্রের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য বিভিন্ন সেন্সর বা ডিভাইস ব্যবহার করা হবে ততক্ষণ পর্যন্ত ভাল ফল আসবে বলে আশা করা যায়। এই যেমন স্মার্ট টি মেইকারের কথাই ধরা যাক। আপনার যখনই চা পানের ইচ্ছা করবে তখন স্বয়ংক্রিয়ভাবে আপনার জন্য চা চলে আসলে বলাই বাহুল্য জীবনটা আরো সহজ হবে।কিন্তু যখন ব্যক্তিবিশেষের কর্মক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য এই প্রযুক্তি ব্যবহার করা হবে তখন তা মানবেতর অবস্থার সৃষ্টি করতে পারে। এই যেমন যদি নিরাপত্তা কার্ড যদি অফিসে কোন কর্মচারী কখন কোথায় আছেন বা কোন কাজে কতটুকু সময় ব্যয় করছেন তা শনাক্ত করারা কাজে ব্যবহার করা হয় তবে তা উল্টো ভাল আনতে পারে। বিশেষ করে কর্মচারীদের উপর অতিরিক্ত নজরদারী বরং উলটো ফল বয়ে আনবে কিনা তা নিয়ে বিতর্ক রয়েছে।



স্বাস্থ্যক্ষেত্রে আইওটি কি ভূমিকা পালন করবে?


বর্তমানে স্মার্ট পিল ব্যবহার করা হচ্ছে। এছাড়াও অনেকেই এখন কব্জিতে স্মার্ট ওয়াচ বা ফিটনেস ব্যান্ড বেঁধে রাস্তায় দৌঁড়াতে নামছেন যা তাদের হৃদস্পন্দন নির্ণয় করবে। এ সবই আইওটি প্রযুক্তির সফলতার সম্ভাবনা বহু গুণে বাড়িয়ে দিয়েছে।ইনটেল থেকে বানানো স্মার্ট ওয়াচের মাধ্যমে পারকিনসন্স রোগে আক্রান্ত ব্যক্তি চলাফেরা করতে কতটুকু কাঁপুনি অনুভব করেন তার সঠিক পরিমাণ জানা যাবে। ‘সোনাম্বা’ বৃদ্ধ বা অসুস্থ ব্যক্তিদের দৈনন্দিন কার্যাবলি মনিটর করে কোন ব্যতিক্রম হলে তা শনাক্ত করে। এছাড়া হৃদরোগে আক্রান্ত ব্যক্তিরা অস্বাভাবিক হৃদস্পন্দন শনাক্ত করার জন্য ‘এলাইভ কোর’ ব্যবহার করতে পারেন।মূলত স্বাস্থ্যসেবা এমন একটি বিষয় যেখানে অতিরিক্ত তথ্য সংগ্রহের মাধমে রোগ নির্ণয়, নিরাময় বা বিকল্প চিকিৎসা ব্যবস্থা তৈরি করা সম্ভব। তাই এক্ষেত্রের উন্নতিতে আইওটি উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করতে পারে।


আজকের মত এতটুকুই। পরবর্তী পর্ব পাওয়ার জন্য যন্ত্র-তান্ত্রিক ল্যাবের পাশেই থাকুন।

 
 
 

Comments


bottom of page